Search
Close this search box.

ফিজিওথেরাপি কি?

ফিজিওথেরাপি কি?

ফিজিওথেরাপি বা ফিজিক্যাল থেরাপি হল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে কোনো মেডিসিন ছাড়াই বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ব্যাথা, প্যারালাইসিস ও স্নায়বিক রোগ সহ আরও বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা হয়।

ফিজিওথেরাপি একটি ইংরেজি শব্দ। এখানে ফিজিও মানে হচ্ছে শারিরীক আর থেরাপি অর্থ এক ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি।

একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক (ফিজিওথেরাপিস্ট) স্বাধীনভাবে রোগীর বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা প্রধানত বাত-ব্যথা, আঘাত জনিত ব্যথা, প্যারালাইসিস ,সড়ক দুর্ঘটনা, শারীরিক প্রতিবন্ধিতা, বিকলাঙ্গতা, পক্ষাঘাত ও বড় কোনো অস্ত্রোপচারের পর রোগীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসাসহ বিভিন্ন ধরনের বাত,মাথা,ঘাড়,কাঁধ,পিঠ,কোমর ও হাঁটুর ব্যথা এবং স্পোর্টস ইনজুরিতে পরিপূর্ন চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকেন।

ফিজিওথেরাপি মানেই ঢালাও ব্যায়াম বা মেশিন নয়। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার প্রধান অংশ হচ্ছে ম্যানুয়াল থেরাপি। ইলেক্ট্রোথেরাপি বা মেশিন থেরাপি ফিজিওথেরাপির একটি অংশ মাত্র। ফিজিওথেরাপি ব্যথা ও ব্যথার কারন দুটোর উপর-ই কাজ করে পক্ষান্তরে ব্যথার ঔষধ সাময়িক ব্যথা কমাতে সক্ষম হলেও ব্যথা ভাল করতে সক্ষম নয়।

ফিজিওথেরাপির ইতিহাস

ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নতুন কোনো চিকিৎসা পদ্ধতি নয়। প্রাচীন গ্রিসে হিপোক্রেটাস ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার সূচনা করেছিলেন, ম্যাসেজ ও ম্যানুয়াল থেরাপির মাধ্যমে। খ্রিস্টপূর্ব ৪৬০ সালে চিকিৎসাবিদ হেক্টর ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার একটি শাখা ব্যবহার করতেন- যাকে বর্তমানে হাইড্রোথেরাপি বলা হয়। তথ্য-উপাত্ত অনুসারে ১৮৯৪ সালে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার বর্তমান ধারা অর্থাৎ ম্যানুয়াল থেরাপি, ম্যানিপুলেটিভ থেরাপি, এক্সারসাইজ থেরাপি, হাইড্রোথেরাপি, ইলেক্ট্রোথেরাপি ইত্যাদি চিকিৎসার প্রবর্তন করা হয়। নিউজিল্যান্ডে ১৯১৩ এবং আমেরিকাতে ১৯১৪ সালে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা শুরু হয়।

ফিজিওথেরাপি কেন প্রয়োজন?

আধুনিক বিশ্বে মানুষ ক্রমশ নির্ভরশীল হচ্ছে যন্ত্রের ওপর। বিশেষ করে কম্পিউটারের ওপর। একনাগারে বসে থেকে কাজ করতে করতে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক বাত ব্যথায় আক্রান্ত হচ্ছে। একজন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক স্বাধীনভাবে রোগীর বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা (প্রধানত বাত-ব্যথা, আঘাত জনিত ব্যথা, প্যারালাইসিস ইত্যাদি) নির্ণয় সহকারে পরিপূর্ন চিকিৎসা সেবা প্রদান করে থাকেন। ফিজিওথেরাপী যেহেতু একটি বিজ্ঞান সম্মত চিকিৎসা পদ্ধতি তাই মানুষের রোগ নির্ণয় সহ অন্যান্য সুস্থতার পেছনে ফিজিওথেরাপিস্টগণ বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

যান্ত্রিক জীবনে মানুষ যখন নিজেকে যন্ত্রের মত ব্যস্ত রাখে, স্বভাবতই তার যান্ত্রিক জীবনে দুঘটনা একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, তাই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে হাড়, জোড়া, মাংসপেশী, নার্ভ টেনটন, লিগামেন্ট, বাত ব্যথা, প্যারালাইসিস সহ বিভিন্ন আঘাত জনিত সমস্যায়। এই সকল সমস্যা থেকে পুরোপুরি নিজেকে সুস্থ্য করতে অবশ্যই ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা অপরিহার্য।

ফিজিওথেরাপিস্ট এর কাজ কি

ফিজিওথেরাপি যেহেতু চিকিৎসা বিজ্ঞানের অঙ্গ তাই একজন ফিজিওথেরাপিস্টকে জানতে হয় স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের প্রায় অনেক বিষয়ে। একজন ফিজিওথেরাপিস্ট অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, প্যাথলজি, সাইকোলজি, ফার্মাকোলজি, কাইলোসিওলজী, অর্থোপেডিক্স, রিউমাটোলজি সমন্ধে যথেষ্ট জ্ঞান রাখেন আর এই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে একজন রোগীকে বন্ধু সুলভ আচরণ করে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলেন একজন ফিজিওথেরাপিস্ট।

একজন রোগীর পুরোপুরি চিকিৎসা সহ পুনর্বাসন করতে দরকার একটি মেডিক্যাল টিম, যে টিমে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত থাকবে সবাই। দুঃখের বিষয় হল, আমাদের দেশে অনেক বড় বড় বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা ডিসিপ্লিনারী টিমে ফিজিওথেরাপিস্ট নাই। যার ফলে একজন রোগীর সঠিক চিকিৎসায় একটি বড় অংশ বাদ পরে যাচ্ছে।

কারণ একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারী টিমে থাকা একজন ফিজিওথেরাপিস্ট বিভিন্নভাবে এ্যাসেসমেন্ট করে রোগীর মানসিক ও শারীরিক অবস্থার উন্নতি করে, যা রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ হতে সহায়তা করে। তাই বলা যায় একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্ট তার দক্ষতা দিয়ে যে ফিজিওথেরাপি প্রদান করে তা রোগীর জন্য একান্ত জরুরী।

স্ট্রোক পরবর্তি প্যারালাইসিস রোগীর ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা

আমাদের দেশে কোন ষ্ট্রোক করা রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয় ঔষধের মাধ্যমে যাতে করে তার মেডিক্যাল স্ট্যাবিলিটি ফিরে আসে। স্ট্রোক পরবর্তী প্যারালাইসিস নিয়ে অনেকেই দীর্ঘসময় ধরে ভূল চিকিৎসার কারনে আর্থিক, মানসিক ও শারিরীক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

আপনি কি জানেন? স্ট্রোক করার পর কারো শরীরের ১ পাশ প্যারালাইসিস বা দুর্বল হয়ে পড়লে তাকে আবার আগের জীবনে সুস্থ্যভাবে ফিরে আসার জন্য একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে – ফিজিওথেরাপি।

একজন দক্ষ, অভিজ্ঞ, কোয়ালিফাইড ও ডিগ্রীধারী ফিজিওথেরাপিস্ট ই পারে আপনাকে আবার আগের জীবনে ফিরিয়ে আনতে।

সবচেয়ে ভালো হয়, স্ট্রোক করার পরবর্তী প্রথম সপ্তাহ থেকেই বা যত দ্রুত সম্ভব ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা শুরু করা। কারন স্ট্রোক করার পর রোগীর মাংসপেশি গুলো প্রথমে নরম বা ফ্লাসিড থাকে, তখন ফিজিওথেরাপি নিলে খুব দ্রুত ভালো ফল পাওয়া যায়, তবে এই মাংসপেশি গুলো ধীরে ধীরে শক্ত বা স্পাস্টিক হয়ে যেতে শুরু করে এবং এক পর্যায়ে গিয়ে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠা খুবই চ্যালেঞ্জিং হয়ে পরে।

আপনি যদি ঢাকার মধ্যে একটি ভালো ফিজিওথেরাপি সেন্টার খুঁজে থাকেন তবে আজই ফ্রি কনসাল্টেন্সি নিতে চলে আসুন প্রত্যাশা হেলথ কেয়ার লিঃ এ,

  1. আমাদের আছে, ৮ জন দক্ষ ও অভিজ্ঞ গ্রাজুয়েটেড ফিজিওথেরাপিস্ট।
  2. স্ট্রোক পরবর্তী প্যারালাইসিস রোগীদের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্পেশাল স্ট্রোক রিহ্যাবিলিটেশন কক্ষ।
  3. পুরুষ ও মহিলা রোগীদের জন্য আলাদা আলাদা চিকিৎসা কক্ষ।
  4. মহিলা রোগীদের জন্য মহিলা ফিজিওথেরাপি চিকিৎসক।
  5. শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি স্ট্রোক পরবর্তী প্যারালাইসিস রোগীকে আগের জীবনে সুস্থ্যভাবে ফিরিয়ে আনার রেকর্ড।

সতর্কবার্তা !

আজকাল বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়, অদক্ষ, ডিগ্রীহীন ও অপেশাদার ছেলে-মেয়েদেরকে দিয়ে ফিজিওথেরাপি দেওয়া হয়। যার ফলে রোগী ও তার পরিবারকে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়, তাই এদের থেকে সতর্ক থাকবেন।

FAQ

ফিজিওথেরাপি কি?

ফিজিওথেরাপি বা ফিজিক্যাল থেরাপি হল একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে কোনো মেডিসিন ছাড়াই বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ব্যাথা, প্যারালাইসিস ও স্নায়বিক রোগ সহ আরও বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা হয়।

ফিজিওথেরাপি দিতে কত টাকা লাগে

ফিজিওথেরাপি চিকিৎসায় খুব বেশি টাকা খরচ করতে হয়না, অন্যদিকে এটি প্রায় সম্পুর্ণ ঔষধ বিহীন একটি চিকিৎসা পদ্ধতি তাই খরচ আরও কম হয়।

ফিজিওথেরাপি কিভাবে দেওয়া হয়

ফিজিওথেরাপি বিভিন্ন শারীরিক ব্যায়াম ও মেশিনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। তবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার প্রধান অংশ হচ্ছে ম্যানুয়াল থেরাপি।

Share the Post:

Related Posts

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারার ফলে সৃষ্টি হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে

Read More