পায়ের গোড়ালি ব্যথা সাধারণত পায়ের গোড়ালির হাড়ের (Calcaneal bone) অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে হয়ে থাকে। এ ব্যথা তীব্র থেকে তীব্রতর হতে পারে।
পায়ের গোড়ালি ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এটি বেশ কষ্টকর হতে পারে এবং হাঁটাচলায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
কিছু ঘরোয়া উপায় যা পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে:
১. বরফ ব্যবহার:
- বরফ ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- একটি পরিষ্কার কাপড়ে বরফ মুড়িয়ে ১৫-২০ মিনিটের জন্য গোড়ালিতে সেঁক দিন।
- দিনে ৩-৪ বার বরফ ব্যবহার করতে পারেন।
২. উষ্ণ সেঁক:
- উষ্ণ সেঁক পেশী শিথিল করতে এবং রক্ত প্রবাহ উন্নত করতে সাহায্য করে।
- একটি গরম তোয়ালে বা গরম জলের বোতল ব্যবহার করে ১৫-২০ মিনিটের জন্য গোড়ালিতে সেঁক দিন।
- দিনে ৩-৪ বার উষ্ণ সেঁক ব্যবহার করতে পারেন।
৩. বিশ্রাম:
- গোড়ালিতে ব্যথা হলে যতটা সম্ভব বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
- ব্যথা বেড়ে গেলে হাঁটাচলা এবং দৌড়ানো এড়িয়ে চলুন।
- দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা থেকে বিরত থাকুন।
৪. ওজন কমানো:
- অতিরিক্ত ওজন গোড়ালির উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
- ওজন কমানোর মাধ্যমে আপনি গোড়ালির ব্যথা কমাতে পারেন।
৫. ব্যথানাশক ওষুধ:
- ব্যথার তীব্রতা কমাতে আপনি আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসিটামিনোফেনের মতো ব্যথানাশক ওষুধ খেতে পারেন।
৬. পায়ের গোড়ালি ব্যথার কিছু ব্যায়াম:
- কিছু হালকা ব্যায়াম গোড়ালির নমনীয়তা এবং শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে।
- পায়ের আঙ্গুলগুলি টানা, গোড়ালি ঘোরানো, এবং পায়ের পাতায় হাঁটার মতো ব্যায়ামগুলি চেষ্টা করতে পারেন।
৭. জুতা:
- ভালোভাবে ফিট করা জুতা পরা গুরুত্বপূর্ণ।
- উচ্চ হিলের জুতা এবং শক্ত তলার জুতা এড়িয়ে চলুন।
- নরম তলার জুতা এবং সহায়ক জুতা পরুন।
পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর প্রাকৃতিক উপায়:
- হলুদ: হলুদে প্রদাহ-বিরোধী এবং ব্যথানাশক গুণ রয়েছে।
- আদা: আদা ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
- লবঙ্গ: লবঙ্গে ব্যথানাশক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে।
এই ঘরোয়া উপায়গুলি ব্যবহার করে আপনি গোড়ালি ব্যথা কমাতে পারবেন। তবে, যদি ব্যথা তীব্র হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর টিপস:
- গোড়ালিতে ব্যথা হলে পায়ের নিচে একটি বালিশ রেখে ঘুমাতে পারেন।
- গোড়ালি উঁচু করে রাখলে ব্যথা এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করবে।
- পায়ের পাতায় ম্যাসাজ কর
পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ
১) অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ডিপোজিটের কারণে গোড়ালির হাড় বৃদ্ধি পায়।
২) দীর্ঘদিন পায়ের মাংসপেশি বা লিগামেন্টে টান লেগে থাকলে।
৩) দীর্ঘদিন প্লানটার ফ্যাসিয়া/পায়ের পাতায় টান লাগার কারণে।
৪) গোড়ালির মাংস পেশি ছিড়ে যাওয়া।
পায়ের গোড়ালি ব্যথার লক্ষণ
১) পায়ের গোড়ালিতে তীব্র ব্যথা হবে।
২) হাটা বা দৌঁড়ানোর সময় ব্যথা বেড়ে যাওয়া।
৩) ঘুম থেকে উঠার পর পায়ের গোড়ালিতে সুচ ফোটার মত তীব্র ব্যথা অনুভূত হওয়া।
যেসব কারনে গোড়ালির ব্যথা বাড়তে পারেঃ
১) স্বাভাবিক ভাবে না হাটা।
২) শক্ত জায়গায় হাটা।
৩) শক্ত জুতা পায়ে দেয়া।
৪) শরীরের ওজন বৃদ্ধি।
৫)ডায়াবেটিস।
৬) এক পায়ে ভর দিয়ে বেশিক্ষণ দাড়িয়ে থাকা।
৭) ফ্ল্যাট ফুট।
পায়ের গোড়ালি ব্যথায় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা
Heel Spur বা পায়ের গোড়ালি ব্যাথায় ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার অত্যন্ত কার্যকরি ভূমিকা রয়েছে। এই সমস্যায় একজন বিপিটি (ব্যাচেলর অব ফিজিওথেরাপি) চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে নিয়ম মাফিক চিকিৎসা নিয়ে সম্পূর্ন সুস্থ্য হওয়া সম্ভব।
পায়ের গোড়ালি ব্যথার প্রতিকার
আপনি বাসায় নিজে নিজে কিছু ব্যায়াম করতে পারেন। যেমনঃ
১) একটি দেয়ালে দুই হাত দিয়ে দাড়ান, যেন একটি পা সামনে সামান্য ভাজ হয়ে থাকে এবং আর একটি পা পেছনে সোজা করে রাখুন।
– পিঠ সোজা রাখুন।
– এরপর পেছনের পা টানটান করে ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
– ১০-১৫ বার করুন।
২) সিড়িতে সোজা হয়ে দাড়ান।
– এবার গোড়ালি সিড়ির বাইরের অংশে রাখুন।
– শরীরের ভর পায়ের গোড়ালিতে দিন। এভাবে ২০-৩০ সেকেন্ড ধরে রাখুন।
– ১০-১৫ বার করুন।
আরো যা করতে হবেঃ
১) নরম জুতা পরিধান করুন।
২) কুসুম গরম পানি বালতিতে নিয়ে পা ভিজিয়ে রাখুন।
৩) শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।