Search
Close this search box.

কোমর ব্যথা কেন হয়? কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার

কোমর ব্যথা হল মেরুদণ্ডের নীচের অংশে, কোমর ও নিতম্বের এলাকায় অনুভূত ব্যথা। এটি একটি অত্যন্ত সাধারণ সমস্যা যা সকল বয়সের মানুষকেই ভোগাতে পারে। অনেকেই বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ও থেরাপি নিয়ে নিজেদের ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে তোলেন, তবে ফিজিওথেরাপি নিয়ে কোমর ব্যথা থেকে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

কোমর ব্যথা কেন হয়

কোমর ব্যথা বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন:

  • মাংসপেশী ও লিগামেন্টের টান: ভারী জিনিস তোলা, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, বা ভুল অঙ্গভঙ্গিতে কাজ করার ফলে মাংসপেশী ও লিগামেন্টে টান পড়তে পারে।
  • মেরুদণ্ডের সমস্যা: মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয়, ডিস্ক স্থানচ্যুতি, বা স্পাইনাল স্টেনোসিস কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে।
  • আর্থ্রাইটিস: অস্টিওআর্থারাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের মতো আর্থ্রাইটিসের বিভিন্ন রূপ কোমর ব্যথার কারণ হতে পারে।
  • কিডনির পাথর: কিডনির পাথর কোমরের নিচের অংশে তীব্র ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
  • ফাইব্রোমায়ালজিয়া: ফাইব্রোমায়ালজিয়া একটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার অবস্থা যা কোমর সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
  • অন্যান্য কারণ: গর্ভাবস্থা, স্থূলতা, এবং অবসাদ কোমর ব্যথার অন্যান্য কারণ হতে পারে।

কোমর ব্যথার প্রতিকার

কোমর ব্যথার প্রতিকার নির্ভর করে এর কারণের উপর। আপনাকে আগে জানতে হবে ঠিক কি কারনে আপনার কোমর ব্যথা শুরু হয়েছে, এক্ষেত্রে একজন ফিজিওথেরাপিস্ট আপনাকে সাহায্য করতে পারেন। কিছু সাধারণ প্রতিকারের মধ্যে রয়েছে:

  • বিশ্রাম: ব্যথা তীব্র হলে, কিছুদিন বিশ্রাম নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
  • বরফ বা তাপ ব্যবহার: বরফ বা তাপ ব্যবহার ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • ব্যথার ওষুধ: ব্যথার ওষুধ, যেমন আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসিটামিনোফেন, ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • ফিজিওথেরাপি: ফিজিওথেরাপিস্ট আপনাকে ব্যথা কমাতে এবং আপনার কোমরের শক্তি ও নমনীয়তা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
  • সার্জারি: কিছু ক্ষেত্রে, মেরুদণ্ডের সমস্যার চিকিৎসার জন্য সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।

কোমর ব্যথার প্রতিরোধ

কিছু সহজ পদক্ষেপ গ্রহণ করে আপনি কোমর ব্যথা প্রতিরোধ করতে পারেন, যেমনঃ

  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম আপনার কোমরের পেশী ও লিগামেন্টকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
  • সঠিক অঙ্গভঙ্গিতে কাজ করুন: বসে, দাঁড়িয়ে, বা কাজ করার সময় সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখুন।
  • আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন: অতিরিক্ত ওজন আপনার কোমরের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
  • ধূমপান ত্যাগ করুন: ধূমপান মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করতে পারে।

কখন ডাক্তার দেখানো উচিৎ?

শুরুতেই ডাক্তার না দেখিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিন, তবে অবশ্যই দ্রুত একজন ফিজিওথেরাপিস্ট এর শরণাপন্ন হতে হবে যদি নিচের কারণ গুলো দেখা দেয়।

  • এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়
  • হঠাৎ করে শুরু হয় বা খারাপ হতে থাকে
  • রাতে ঘুম ভেঙে দেয়
  • আপনাকে হাঁটতে বা দাঁড়াতে অসুবিধা করে
  • অঙ্গহীনতা অনুভূত হয়
  • প্রস্রাব বা মলত্যাগ নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়
  • জ্বর বা ওজন কমে যায়

কোমর ব্যথা নিয়ে অবহেলা নয়

কোমর ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এটি খুবই যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। যদি আপনি কোমর ব্যথায় ভুগছেন, তাহলে এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক।

আপনার কোমর ব্যথার কারণ এবং সঠিক চিকিৎসা নির্ধারণের জন্য অবশ্যই একজন যোগ্যতাসম্পন্ন ফিজিওথেরাপিস্টের সাথে পরামর্শ করুন। ফিজিওথেরাপিস্ট আপনার ব্যথা, চিকিৎসা ইতিহাস, এবং শারীরিক পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে আপনার জন্য সঠিক চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে পারবেন।

Share the Post:

Related Posts

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারার ফলে সৃষ্টি হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে

Read More