Search
Close this search box.

কোমর ব্যথা কমানোর উপায়

কোমরে ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা। যেকোনো বয়সের যেকোনো মানুষ এই সমস্যায় ভুগতে পারে। কোমরে ব্যথার অনেক কারণ রয়েছে। এর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হলো:

  • মেরুদণ্ডের অস্বাভাবিকতা, যেমন ডিস্ক প্রলাপস
  • মাংসপেশির টান বা ছিঁড়ে যাওয়া
  • জয়েন্টের প্রদাহ
  • টিউমার বা ইনফেকশন
  • ওজন বেশি হওয়া
  • দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা বা দাঁড়িয়ে থাকা
  • ভারী জিনিস তোলা

কোমরে ব্যথা হলে অনেকেই নানা রকম ওষুধ বা পথ্য গ্রহণ করে থাকেন। তবে, কিছু ঘরোয়া উপায়ে কোমরে ব্যথা কমানো সম্ভব। এই উপায়গুলি হলো:

সেঁক

কোমরের ব্যথা কমাতে সেঁক একটি কার্যকর উপায়। গরম সেঁক ব্যথার জায়গায় রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। সেঁক দিতে পারেন গরম পানির তোয়ালে, হিটিং প্যাড বা সোডিয়াম বাইকার্বনেট মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে।

আদা

আদা একটি প্রাকৃতিক ব্যথানাশক। আদা কোমরে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আদা চা, আদা রস বা আদা দিয়ে রান্না করা খাবার খেতে পারেন।

হলুদ

হলুদ একটি আরেকটি কার্যকর প্রাকৃতিক ব্যথানাশক। হলুদ কোমরে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। হলুদ দুধ, হলুদ চা বা হলুদ দিয়ে রান্না করা খাবার খেতে পারেন।

মেথি বীজ

মেথি বীজ কোমরে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। মেথি বীজ দিয়ে মালিশ করলে ব্যথা কমে যায়। মেথি বীজ গুঁড়ো করে দুধের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ব্যথার জায়গায় মালিশ করুন।

নিয়মিত ব্যায়াম

নিয়মিত ব্যায়াম কোমরে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ব্যায়াম মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী করে এবং নমনীয়তা বাড়ায়। কোমরে ব্যথা হলে হালকা ব্যায়াম শুরু করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে ব্যথা কমে যাবে এবং ভবিষ্যতে কোমরে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকিও কমবে।

ওজন কমানো

ওজন বেশি থাকলে কোমরে ব্যথার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই ওজন কমাতে হবে। ওজন কমলে কোমরের উপর চাপ কমবে এবং ব্যথা কমে যাবে।

  • সঠিকভাবে বসুন ও দাঁড়ান
    সঠিকভাবে বসুন ও দাঁড়ান। সঠিকভাবে বসলে ও দাঁড়ালে মেরুদণ্ড সোজা থাকে এবং কোমরের উপর চাপ কমে।
  • দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না
    দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না। নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করুন।
  • ভারী জিনিস সাবধানে তোলা ও নামানো
    ভারী জিনিস সাবধানে তোলা ও নামানো। কোমর বাঁকিয়ে ভারী জিনিস তুলবেন না।
  • প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
    কোমরে ব্যথা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা ব্যথা খুব বেশি হয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা দেবেন।

কোমর ব্যথা প্রতিরোধ

কোমরে ব্যথা প্রতিরোধে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি লক্ষ্য রাখুন:

  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • সঠিকভাবে বসুন ও দাঁড়ান।
  • দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না।
  • ভারী জিনিস সাবধানে তোলা ও নামানো।

যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন

যোগব্যায়াম নমনীয়তা বাড়ায়, মেরুদণ্ডকে শক্তিশালী করে এবং মানসিক চাপ কমায়। কোমরে ব্যথা কমাতে বিশেষ কিছু যোগব্যায়াম কার্যকর। যেমন, শিশু আসন, ভুজঙ্গাসন, সাবাসন, অধোমুখ শ্বানাসন ইত্যাদি। এছাড়াও, নিয়মিত মেডিটেশন করলে মানসিক চাপ কমে এবং ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা বাড়ে।

অ্যারোমা থেরাপি

অ্যারোমা থেরাপি হলো উদ্ভিদের এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করে চিকিৎসা করার পদ্ধতি। ল্যাভেন্ডার, রোজমেরি, ইউক্যালিপটাস ইত্যাদি এসেনশিয়াল অয়েল কোমরে ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। এই এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে মালিশ করতে পারেন বা ডিফিউজার ব্যবহার করে ঘরে ছড়িয়ে দিতে পারেন।

আকুপাংচার

আকুপাংচার হলো শরীরের বিভিন্ন স্থানে সূঁচ ফুঁড়িয়ে চিকিৎসা করার পদ্ধতি। আকুপাংচার কোমরে ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, এই চিকিৎসা একজন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত।

কাইরোপ্রাক্টিক

কাইরোপ্রাক্টিক হলো মেরুদণ্ড ও জয়েন্টের সমস্যা চিকিৎসা করার পদ্ধতি। কোমরে ব্যথা হলে কাইরোপ্রাক্টরের পরামর্শ নিতে পারেন। তবে, এই চিকিৎসা একজন বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত।

মালিশ

মালিশ মাংসপেশির টান কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। কোমরে ব্যথা কমাতে নিয়মিত মালিশ করতে পারেন। তবে, একজন অভিজ্ঞ ম্যাসাজ থেরাপিস্টের কাছে মালিশ করানো উচিত।

পরিপূরক

ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ইত্যাদি পরিপূরক কোমরে ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, কোনোরকম পরিপূরক খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।

শেষ কথা

কোমরে ব্যথা কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। তাই কোমরে ব্যথা হলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। চিকিৎসক আপনার ব্যথার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা দেবেন। উপরে উল্লিখিত ঘরোয়া উপায়গুলি কোমরে ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে, এগুলো কোনো চিকিৎসার বিকল্প নয়।

Share the Post:

Related Posts

ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা

ডায়াবেটিস একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারার ফলে সৃষ্টি হয়। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে

Read More